নিজস্ব প্রতিবেদক
বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান ২০২৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে টানা প্রায় ১৬ মাস থানা পরিচালনায় যে দক্ষতা, কঠোরতা ও মানবিকতার সমন্বয় দেখিয়েছেন -তা বরিশাল মহানগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে এক নতুন পরিবর্তন এনেছে। চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রশাসনিক রদবদলের অংশ হিসেবে তিনি পার্শ্ববর্তী এয়ারপোর্ট থানায় বদলি হন।
জানা গেছে, ওসি মিজানের সময়কালে কোতোয়ালী থানা বরিশালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল থানা হিসেবে পরিচিতি পায়। অপরাধ দমন, রাজনৈতিক নাশকতা নিয়ন্ত্রণ, জনবান্ধব সেবা এবং আধুনিক পুলিশ ব্যবস্থাপনার প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি নতুন মানদণ্ড তৈরি করেন। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কাঠামো, দলীয় ক্যাডারচক্র, দখলদার গোষ্ঠী এবং বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেন। তার নেতৃত্বে প্রতিদিনই গ্রেপ্তার হন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, নাশকতাকারী এবং নানান অপরাধে জড়িত সক্রিয় নেতারা।
এই ধারাবাহিক অভিযানের ফলে- রাজনৈতিক নাশকতার হার প্রায় শূন্যে নেমে আসে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর দৌরাত্ম্য বন্ধ হয়,
সাধারণ মানুষ নিরাপত্তা ফিরে পায়, শহরে স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় থাকে। কোতোয়ালী থানা এসময়ে রাজনৈতিক সন্ত্রাস দমনের সবচেয়ে কার্যকর ইউনিট হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
সেবাভোগীরা জানিয়েছেন, ওসি মিজানের সময় থানায় আগত সাধারণ মানুষ অভূতপূর্ব সেবা পান। তার সময়ে-অভিযোগ গ্রহণে কোনো বিলম্ব হত না, নারীদের জন্য নিশ্চিত করা হয় নিরাপদ পরিবেশ, জিডি নিষ্পত্তি সময় কমানো হয়, সাধারণ মানুষের প্রবেশ ও সেবা গ্রহণ সহজ করা হয়,অভিযোগ করে সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হতো। ফলে ১৬ মাসে থানায় আগত অধিকাংশ সেবাপ্রত্যাশী সন্তুষ্টির প্রকাশ করেন ।
তদন্ত ব্যবস্থায় তিনি স্বচ্ছতা, সময়ানুবর্তিতা ও ন্যায়সংগত পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তার নির্দেশনা প্রতিটি মামলার তদন্ত অগ্রগতি নিয়মিত মনিটর হয়, গুরুত্বপূর্ণ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব হয়, অযথা হয়রানি বা বিলম্ব বন্ধ হয়।
ফলে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত অগ্রসর হয় এবং ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচারের সুষ্ঠু পরিবেশ পান। প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক থানা পরিচালনা তার সময়ে থানায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ে। যার মধ্যে ছিল-ডিজিটাল মামলা ব্যবস্থাপনা, অনলাইন তথ্য সংরক্ষণ, তদন্ত অগ্রগতি মনিটরিং, সাইবার অপরাধ দমন কার্যক্রম। এই ব্যবস্থার ফলে কাজের গতি বৃদ্ধি পায় এবং দায়িত্বে থাকা সদস্যদের পেশাদারিত্বও উন্নত হয়।
ওসি মিজান শুধু কঠোর পুলিশিংয়ের জন্যই নয়, মানবিক কার্যক্রমের জন্যও পরিচিতি পান। দুর্ঘটনা, জরুরি অসুস্থতা, পথশিশু সহায়তা, অসহায় মানুষের পাশে থাকা—এসব কর্মকাণ্ড তাকে জনবান্ধব পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে বিশেষ পরিচিতি দেয়।
এদিকে জানা গেছে, ওসি মিজানের নেতৃত্বে থানায় শৃঙ্খলা, সময়নিষ্ঠতা, টিমওয়ার্ক এবং দায়িত্ব বণ্টনে সুস্পষ্ট উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। থানা পরিচালনা, টহল, অভিযান পরিকল্পনা, তদন্ত কার্যক্রম-সবখানে সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় থাকে।
ওসি মিজানের বদলির পর স্থানীয় মানুষ, ব্যবসায়ী, থানার সদস্য, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ অনেকেই মত প্রকাশ করেন- তার নেতৃত্বে কোতোয়ালী থানা সেবা, নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনায় একটি সফল সময় অতিক্রম করেছে। বদলির দিনে অনেকে থানায় এসে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জানান। এছাড়া নতুন ওসিও একই ধারায় ভুমিকা পালন করবেন এটিই প্রত্যাশা সেবাপ্রত্যাশীদের।
সম্পাদক : মোঃ রাকিবুল হাছন(ফয়সাল রাকিব)
Copyright © 2024 dailysattyasangbad.com . All rights reserved.